দুটো শব্দবন্ধ বাংলা ভাষায় পরিচিত, পড়াশোনা ও পড়ালেখা । দুটো কি একই জিনিস বোঝায় ? অনেকে এক ভেবেই ব্যবহার করেন, আমি তা মানিনা । পড়াশোনা আর পড়ালেখার মধ্যে ফারাক বিস্তর । ত্রিপুরার অধিকাংশ স্কুলেই পড়াশোনা শেখানো হয়, পড়ালেখা হয়না । তোমরা এতে মনক্ষুণ্ণ হতেই পারো, বলবে - স্যার, আমি তো লিখতে পারি, এই দেখুন কি সুন্দর হাতের লেখা আমার ! হ্যাঁ, লেখা তোমার হাতের সুন্দর হতেই পারে কিন্তু লিখতে পারো কি ? মুখস্ত না করে ? আমার অভিজ্ঞতা থেকে জানি, এ রাজ্যের অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই নির্মিতি মুখস্থ করে লেখে - কি কাণ্ড! অথচ এতে কারও কোনো মাথা ব্যথা নেই । তাহলে Writing বলে আলাদা বিভাগের কি প্রয়োজন ছিল ? সৌন্দর্য বৃদ্ধি ? অনেকের তাই ধারনা । যাহোক, লেখা আমাদের শিখতেই হবে । শিখতে হবে বলেই এই পোষ্ট সিরিজের অবতারনা ।
ইংরেজি লিখতে হলে এই তিনটা জিনিস জানতেই হবে, বাংলার ক্ষেত্রেও একই শর্ত । আগামী পর্বে আলোচনা করবো, গদ্য ও কবিতার পার্থক্য ও গদ্যের শ্রেণিবিন্যাস নিয়ে । ততক্ষণে এই তিনটে বিদ্যা একটু ঝালিয়ে নাও ।
গোঁড়ায় গলদ থাকলে কোন কাজই ভাল হয়না । আমি জানিনা কার গোঁড়ায় গলদ আছে আর কার নেই । তাই শুরু থেকেই শুরু করা যাবে । ইংরেজি ও বাংলা দুই ভাষায় লেখার জন্যেই এই ব্লগ সিরিজ কাজে আসবে । কোথাও কোন সমস্যা থাকলে যে কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারো । এখানে ক্লিক করলেই আমার WhatsApp চলে আসবে।
তবে লেখা শুরু করার আগে দেখে নিতে হবে লেখার সব যন্ত্রপাতি আমাদের কাছে রয়েছে কিনা । আমি নিচে লিস্ট দিচ্ছি দেখে নাও সবকিছু আছে কি নেই । কি বললে, খাতা ও কলম আছে ? হ্যাঁ, তা তো থাকবেই, কিন্তু খাতা কলমের বাইরেও কয়েকটা জিনিসের প্রয়োজন আছে । চল তাহলে শুরু করি ।
Tense এর ধারনাঃ Tense, নাম তো শুনেই থাকবে । বাংলায় একে বলি ক্রিয়ার কাল । বাঙালীদের বাংলা ভাষার কাল নিয়ে কোন সমস্যা হয়না, ও নিয়ে খুব একটা না ভাবলেও চলবে । কিন্তু যাদের মাতৃভাষা বাংলা নয়, ককবরক, রিয়াং ইত্যাদি, তাদের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লক্ষ করেছই ক্রিয়ার কাল ভোগায় । আর ইংরেজি Tenses সবাইকেই কষ্ট দেয় । যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি তাদের কথা অবশ্য জানিনা । তো, বাংলা অথবা ইংরেজি ভাষায় কিছু লিখতে হলে Tense এর প্রকৃত ধারনা অবশ্যই চাই । আশা রাখি তুমি Tense ভালই জানো, না জানলেও চিন্তার কিছু নেই । এখন শিখে নাও ।
Syntax বা বাক্যগঠনঃ “I ask like to you would a question” এর অর্থ কী? কোনো অর্থ নেই, কিন্তু এই শব্দ গুলোকেই অন্যরকম সাজিয়ে "I would like to ask you a question” বললে অর্থ প্রকাশ পায় । তাজ্জব ব্যাপার ! অর্থাৎ বোঝা গেল শব্দ জানলেই কথা বলা যায়না, আবার কম শব্দ জেনে সেগুলোকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারলে অনেক কিছু বলা সম্ভব । তো যে জিনিসটা জানতে হবে তা হচ্ছে, বাক্য গঠনের প্রচলিত রীতি । তা নাহলে তুমি যা লিখবে তা তুমি নিজে ছাড়া আর কেউ বুঝবেনা, ফলে পরীক্ষায় গোল্লা ছাড়া কিছু আসবেনা ।
Vocabulary:ব্যাকরণ না জানলেও দুয়েক কথা বলেই ফেলা যায়, কিন্তু এই দুয়েক কথা বলতেও যা লাগে তার নাম শব্দ । যেকোনো ভাষা শেখা প্রথম অধ্যায় হচ্ছে সেই ভাষার কিছু শব্দ শেখা । ভয় নেই, লক্ষ শব্দ জানার প্রয়োজন নেই । যে ভাষায় লিখতে চাইছো সে ভাষার হাজার দুয়েক শব্দ জানা থাকলেই চলবে ।
এই প্রসঙ্গে জেনে নেয়া প্রয়োজন Vocabulary ঠিক কি জিনিস । Vocabulary হচ্ছে আমাদের মস্তিষ্কে বসত করা শব্দের সমাজ । ইংরেজি ভাষায় লক্ষাধিক শব্দ রয়েছে, কোন মানুষই বোধহয় এত শব্দ জানেননা । ইংরেজি যাদের মাতৃভাষা তারা হাজার কুড়ি শব্দ জানেন, উচ্চ শিক্ষিতরা জানেন প্রায় চল্লিশ হাজার । তো একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তির মাথায় যতগুলো শব্দ থাকে সেই শব্দ গুলোকে বলা হয় ওই ব্যক্তির শব্দভাণ্ডার বা Vocabulary । Vocabulary আবার দুই রকমের, প্রথমত Active Vocabulary ও দ্বিতীয়ত Passive Vocabulary ।
Active Vocabulary: যে সমস্ত শব্দ আমরা কথা বলার সময় অনায়াসে ব্যবহার করতে পারি, সেগুলোকে বলা হয় সক্রিয় শব্দভাণ্ডার বা Active Vocabulary.
Passive Vocabulary:আবার এমন অনেক শব্দই আমরা জানি যা কথা বলার সময় ব্যবহার করতে পারিনা কিন্তু লেখার সময় বা শোনার ক্ষেত্রে ঠিকঠাকই অনুধাবন করতে পারি, এগুলোকে বলে Passive Vocabulary । বাংলা মিডিয়ামে পড়া অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের শেখা ইংরেজি শব্দ গুলো Passive Vocabularyতে বাস করে, যে কারণে কথা বলার সময় বারে বারেই হোঁচট খেতে হয় । এর প্রধান কারণ হচ্ছে, ইংরেজি শব্দগুলোকে বাংলা তর্জমার সঙ্গে যুক্ত করে মনে রাখা । যেমন ধর তুমি মুখস্ত করেছ, “Separate মানে আলাদা...Separate মানে আলাদা...” এবার যখনই তোমার Separate শব্দটা বলার প্রয়োজন হবে, তোমার মনে সবার আগে আসবে "আলাদা" তারপর তুমি সেটার ইংরেজি শব্দ কি মুখস্ত করেছিলে তা মনে করবে, তারপর মনে পড়লে বলবে Separate । কি জ্বালা ! এই জ্বালা থেকে মুক্তি পেতে হলে কিছু উপায় অবলম্বন করতে হবে, অন্য কোনো পোষ্টে সে নিয়ে আলোচনা করব ।
ইংরেজি লিখতে হলে এই তিনটা জিনিস জানতেই হবে, বাংলার ক্ষেত্রেও একই শর্ত । আগামী পর্বে আলোচনা করবো, গদ্য ও কবিতার পার্থক্য ও গদ্যের শ্রেণিবিন্যাস নিয়ে । ততক্ষণে এই তিনটে বিদ্যা একটু ঝালিয়ে নাও ।
0 মন্তব্যসমূহ